IoT দ্রুত বিকাশমান ক্ষেত্র যেখানে দক্ষতা তোমাকে এগিয়ে রাখবে
ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা এই শিল্পে প্রবেশের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ তৈরি করছে। তবে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু হার্ড স্কিলই যথেষ্ট নয়।
এমবেডেড সিস্টেম ডিজাইন, প্রোগ্রামিং এবং সাইবারসিকিউরিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত দক্ষতা, তবে সফট স্কিলও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই এগুলোকে উপেক্ষা করেন, অথচ সঠিক সফট স্কিল অর্জন করলে তুমি অন্যদের থেকে আলাদা হতে পারবে এবং IoT-শিল্পে সফল হতে পারবে।
তোমার ক্যারিয়ারকে আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় ৫টি IoT সফট স্কিল সম্পর্কে জানতে আমাদের বিশেষ প্রতিবেদন পড়ুন ।
১.যোগাযোগ দক্ষতা
কর্মক্ষেত্রে দক্ষ যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত IoT-এর মতো প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে। এটি সহযোগিতার উন্নয়ন, ক্লায়েন্টদের সাথে কার্যকর সংযোগ এবং নেতৃত্বে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে সহায়তা করে।
IoT এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত ধারণাগুলি অনেকের কাছে জটিল মনে হতে পারে। তাই সহজভাবে ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা অর্জন করা অত্যন্ত দরকারি। গল্প বলার দক্ষতা এখানে বড় ভূমিকা রাখে, কারণ গবেষণা অনুযায়ী, আকর্ষণীয় আখ্যান দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
এই দক্ষতা উন্নত করতে তোমার ব্যক্তিগত IoT প্রকল্পগুলোর ব্যাখ্যা অনুশীলন করতে পারো। নেটওয়ার্কিং ইভেন্টে যোগ দিয়ে শিল্প পেশাদারদের সাথে কথা বলার অভ্যাস করাও সহায়ক হতে পারে। এছাড়া, চোখের যোগাযোগ বজায় রাখা ও আত্মবিশ্বাসী শারীরিক ভাষার ব্যবহারও তোমার যোগাযোগ দক্ষতাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।
২. ধারাবাহিক শিক্ষা
IoT একটি দ্রুতগতির ক্ষেত্র, তাই আপনাকে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হতে হবে। সময়ের সাথে সাথে নতুন জিনিস শেখার ইচ্ছা এবং প্রতিশ্রুতি আপনাকে সেই চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।
প্রযুক্তি কীভাবে অনেক ভূমিকা ব্যাহত করছে তা বিবেচনা করে চলমান শেখার মনোভাবও একটি ভালো ধারণা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) আজ প্রায় অর্ধেক কাজের কাজ স্বয়ংক্রিয় করতে পারে, তাই ভবিষ্যতে আপনি যে কাজগুলি দেখতে পাবেন তা আজকের মতো হবে না। আপনি সর্বদা চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে সেই পরিবর্তনের নেতিবাচক পরিণতি এড়াতে পারেন।
এই নরম দক্ষতা বিকাশ মূলত আপনার নিজের সময়ে নতুন জ্ঞান অর্জনের বিষয়। নিয়মিত সেক্টর ব্লগ এবং নিবন্ধ পড়ুন অথবা চলমান শিক্ষার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার জন্য আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে এমন প্রকল্প গ্রহণ করুন। আপনার বর্তমান চাকরিতে নতুন প্রকল্পগুলি মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করাও সাহায্য করতে পারে।
৩. সহানুভূতি এবং আবেগগত বুদ্ধিমত্তা
অনেক পেশাদাররা যে আইওটি সফট স্কিলটি উপেক্ষা করতে পারেন তা হল আবেগগত বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজনীয়তা। এই শিল্পে একটি দলের অংশ হিসেবে কাজ করা এবং শক্তিশালী গ্রাহক সম্পর্ক গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর জন্য মানুষের উদ্বেগ বোঝার এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার ক্ষমতা প্রয়োজন। এটি আপনাকে প্রকৃত মানুষের চাহিদা পূরণকারী আইওটি সমাধান তৈরি করতেও সাহায্য করবে।
আবেগগত বুদ্ধিমত্তা এবং যোগাযোগ ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, কারণ সক্রিয় শ্রবণ এবং সহজলভ্য ভাষা ব্যবহার উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন একটি ক্ষেত্রে আরও ভালো হয়ে উঠবেন, অন্য ক্ষেত্রে অগ্রগতি করা সহজ হবে।
অনুশীলনের মাধ্যমে সহানুভূতি গড়ে তোলা সম্ভব, যদিও এটি আপনার জন্ম বা বেড়ে ওঠার মতো মনে হতে পারে। বিভিন্ন পটভূমির লোকেদের সাথে কথা বলা, সক্রিয় শ্রবণে জড়িত হওয়া এবং আপনার নিজের আবেগ এবং তাদের প্রভাব সম্পর্কে প্রতিফলন করা, সবই সাহায্য করবে।
৪. সৃজনশীলভাবে সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতা
IoT (ইন্টারনেট অব থিংস) প্রকল্পগুলো তখনই সবচেয়ে কার্যকর হয়, যখন তা বাস্তব কোনো সমস্যার সহজ সমাধান দেয়। আবার অনেক সময়, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এমন সব জটিল সমস্যা দেখা দেয় যা সাধারণ উপায়ে সমাধান করা কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য সৃজনশীলভাবে চিন্তা করে সমস্যা সমাধান করা খুবই দরকার।
একজন আইওটি প্রকল্পে কাজ করা ব্যক্তি হিসেবে, আপনাকে যেকোনো সমস্যাকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে বুঝে নিতে হবে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করা এবং নতুন কিছু উপায়ে সমাধান খুঁজে বের করাও গুরুত্বপূর্ণ।
এই দক্ষতা বাড়াতে হলে নতুন নতুন সমস্যা ও আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করুন। নিজের সময় কাজে লাগিয়ে এমন সব আইওটি প্রজেক্টে হাত দিন, যেগুলোতে আগে কাজ করেননি। এমনকি জীবনের ছোট ছোট সমস্যারও একাধিক সমাধান ভাবার চেষ্টা করুন। আপনি যত বেশি অনুশীলন করবেন, সমস্যাগুলো তত সহজ মনে হবে এবং নতুন উপায় খুঁজে বের করাও সহজ হবে।
৫. সময় ব্যবস্থাপনা
IoT-তে আপনার ক্যারিয়ার প্রসারিত করার জন্য আপনাকে শক্তিশালী সময় ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বিকাশ করতে হবে। অর্ধেকেরও বেশি প্রযুক্তিবিদ বলেছেন যে তারা দৈনন্দিন কাজের চাপে ক্লান্ত বোধ করেন, যার ফলে অনেককে দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজ সম্পন্ন করতে সমস্যা হয়। উন্নত সময় ব্যবস্থাপনা আপনাকে এই পরিস্থিতিগুলি এড়াতে সাহায্য করবে।
কার্যকর সময় ব্যবস্থাপনা মূলত কাজগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে শেখা এবং আপনার শক্তি চক্র এবং জিনিসগুলি আপনার কত সময় নেয় তা বোঝার বিষয়ে। আপনার সময়সূচীতে কীভাবে জিনিসগুলি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন এবং আপনি কোথায় উন্নতি করতে পারেন সে সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা পেতে কর্মদিবস জুড়ে আপনার কর্মক্ষমতার দিকে মনোযোগ দিন।
আপনার ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন পদ্ধতির সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আপনি কাজগুলিকে জাগিয়ে তুলতে আরও ভাল হতে পারেন। কয়েকটি আবেগপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণ করুন এবং আপনার জন্য কী কাজ করে তা দেখার জন্য বিভিন্ন সময়সূচী কৌশল চেষ্টা করুন।
